January 2019
বাংলাদেশে প্রতিবছর নোটবুক ও ডেস্কটপ মিলিয়ে কতগুলো কম্পিউটার মানুষের হাতে আসে?
চার লাখের বেশি হওয়ার কথা নয়। ১৬ কোটি মানুষের দেশে সংখ্যাটা খুব কম। তবে প্রতিবছর এটা বাড়ছে।
আমাদের দেশে কম্পিউটারের মধ্যে নোটবুক বা ল্যাপটপ কেনাবেচা হয় বেশি। আজ থেকে পাঁচ–সাত বছর আগেও ডেস্কটপের দোর্দণ্ডপ্রতাপ ছিল। এখন ১০০টি কম্পিউটার বিক্রি হলে ৭০টি হয় নোটবুক। তবে ২০১৮ সালে ডেস্কটপ বিক্রির হার আবার কিছুটা বেড়ে চলছে।
বছর কয়েক আগে ট্যাবলেট কম্পিউটার ঝড়ের বেগে বাজারে প্রবেশ করে। ধারণা করা হচ্ছিল, নোটবুক যেমন ডে স্কটপের স্থান দখল করেছে, ট্যাবলেটও তেমনি নোটবুককে হটিয়ে দেবে। কিন্তু তা হয়নি। বরং ২০১৮–এর শেষ পর্যন্ত ট্যাবলেটের অবস্থান আরও দুর্বল হয়েছে। নোটবুকের সঙ্গে ট্যাবলেটের সুবিধা দেওয়ার জন্য কিছু ডিটাচেবল নোটবুক এসেছে, যেগুলোতে পর্দাকে আলাদা করে ফেলা যায়। এ ধারাও তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি।
নোটবুক হয়েছে কৃশকায়
স্থূলাকৃতির নোটবুক ধীরে ধীরে কৃশকায় হয়েছে। ক্রেতারা হালকা আর স্লিম নোটবুক পছন্দ করেন। যেসব যন্ত্রাংশ নোটবুককে স্থূল করে তোলে, সেগুলো দ্রুত বাতিল হতে থাকল। এখন ঘূর্ণমান চাকার স্থূল আকৃতির হার্ডডিস্কের জায়গায় স্থান করে নিচ্ছে ক্রেডিট কার্ডের মতো এসএসডি। ২০১৮–এর ক্রেতাচাহিদা দেখে বলে দেওয়া যেতে পারে যে সামনে এসএসডি ব্যাপক জনপ্রিয় হবে। নোটবুককে ভারী করে তোলার আরেকটা যন্ত্রাংশ হলো ডিভিডি ড্রাইভ। এর স্থানও এখন আর নোটবুকে নেই বললেই চলে। ডিভিডি ছাড়া নোটবুকের কথা কিছুদিন আগেও ভাবা যেত না। একসময় ফ্লপি ড্রাইভ ছাড়া পিসির (পার্সোনাল কম্পিউটার) কথা যেমন ভাবা যেত না, এটাও তেমন। নোটবুকের ভেতরে আরও যা যা আছে, সেখানেও পরিবর্তন এসেছে।
কপি নয়, আসল উইন্ডোজ
কপি করা উইন্ডোজের দিন ফুরিয়ে আসছে দ্রুত। ক্রেতারা এখন আসল (লাইসেন্সড) উইন্ডোজসমেত নোটবুক নিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ২০১৮ সালে দেখা গেছে, শুধু ৩০ শতাংশ নোটবুক আমদানি হয়ে আসে বিনা মূল্যের ডস (ডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম) দিয়ে, বাকিগুলোতে আসল অপারেটিং সিস্টেম দেওয়া থাকে। বিনা মূল্যের ডসের এই ৩০ শতাংশ নোটবুকে সব ক্রেতা কপি উইন্ডোজে ব্যবহার করেন, বিষয়টা আবার তা না। এর একটা বড় অংশ পূরণ হয় ওপেন সোর্সের অপারেটিং সিস্টেম দিয়ে। করপোরেট ক্রেতার বাইরে মাইক্রোসফটের জনপ্রিয় অফিস প্যাকেজের ক্রেতার সংখ্যা ২০১৮ সালেই বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। অন্যদিকে, ক্লাউড–নির্ভর গুগলের অফিস প্যাকেজ এখন মাইক্রোসফট অফিসের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়।
ব্র্যান্ড কম্পিউটারের চাহিদা বেড়েছে
১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের ডেস্কটপে ক্লোন বা হোয়াইট বক্স পিসির আধিপত্য ছিল। এ সময়ে ব্র্যান্ড নোটবুক এগিয়ে চললেও ব্র্যান্ড ডেস্কটপ পিসিকে ক্রেতারা সাদরে গ্রহণ করেননি। শুধু করপোরেট ক্রেতাদের মধ্যে এর একটা চাহিদা ছিল, যা পুরো বাজারের ১৫ শতাংশের বেশি না। ২০১৮ সালে দেখা গেল, ক্রেতাদের কাছে ক্লোনের জায়গায় ব্র্যান্ড কম্পিউটারের চাহিদা বাড়ছে। ২০১৮ সালের সার্ভার ক্রেতাদের আগ্রহের তালিকায় হোয়াইট বক্স প্রায় হারিয়ে গেছে এবং ব্র্যান্ড সার্ভার ওই জায়গার প্রায় পুরোটাই দখল করে নিয়েছে। যে কোম্পানিগুলো হোয়াইট বক্সের জন্য যন্ত্রাংশ—যেমন মেইন বা মাদারবোর্ড, মেমোরি, কেসিং প্রভৃতি নির্মাণ করে, তারা এখন মূলত গেমিং কম্পিউটার ক্রেতাদের মধ্যে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করছে।
হঠাৎ এএমডির উত্থান
বাংলাদেশে এএমডি প্রসেসর–নির্ভর কম্পিউটার বাজার ৫ শতাংশের নিচে। চিত্রটা বিশ্বের অন্যান্য জায়গার মতো না। তবে ২০১৮–তে এএমডির রাইজেন প্রসেসর দেশে একটা আলোড়ন তুলেছিল, বছরের শেষ দিকে ইন্টেল প্রসেসরের জোগান পৃথিবীজুড়ে যখন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যায়। এ সময় ইন্টেল প্রসেসর কিনতে ক্রেতাদের অনেক বাড়তি দাম দিতে হয়েছে, এখনো দিতে হচ্ছে। ধারণা করা হয়েছিল, বাংলাদেশের ক্রেতারা ইন্টেল থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে এবার এএমডিকে একটা বড় স্থান দেবে। কিন্তু আদতে এটা ততটুকু ঘটেনি।
ল্যাপটপে কে কোথায়?
আগের বছরগুলোর মতো ২০১৮–তে ক্রেতারা নোটবুকে এইচপিকে প্রথম স্থান দিয়ে রেখেছে। জনপ্রিয়তায় আসুস নোটবুক অনেক এগিয়ে গেছে, এখন তারা দ্বিতীয় স্থান নিয়ে আছে। অনেক দেশের প্রধান ও তুমুল জনপ্রিয় ব্র্যান্ড এসার বাংলাদেশের বাজারে টিমটিম করে জেগে আছে। ২০১৮–তে লেনোভো ও ডেল তাদের প্রোগ্রামে সুস্থির ছিল না, তাই সাধারণ নোটবুক ক্রেতাদের মধ্যে এ সময়ে খুব বড় আঁচড় কাটতে পারেনি। তবে করপোরেট ক্রেতাদের মধ্যে ডেলের অবস্থান এবার আরও শক্ত হয়েছে। শুধু ডেস্কটপের দিকটা দেখলে ডেলের অবস্থান প্রথম।
ঢাকা ছাড়িয়ে
কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা এখন শুধু ঢাকা ও কিছু শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। প্রত্যন্ত এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সারা দেশে আনুমানিক ৪০ লাখ কম্পিউটার এখন ব্যবহারে আছে। হিসাবটা দেশের জনসংখ্যাকে ভিত্তি করে করতে গেলে ১৬ কোটির মধ্যে সংখ্যাটা নিতান্তই কম। বছর বছর কম্পিউটার ব্যবহার বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই এটাকে সাশ্রয়ী করতে হবে, ভালো সেবা নিশ্চিত করতে হবে, কোয়ালিটি ইন্টারনেটকে সুলভ করতে হবে।
কারণ, এটা ইতিমধ্যে প্রমাণিত যে বাংলাদেশের মানুষ নতুন জিনিসকে সমাদরে গ্রহণ করতে জানে।

ইন্টারনেট মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে। মানুষ এখন অনলাইনে অর্থ আয়ের জন্য নানা কৌশল প্রয়োগ করছে। অনলাইনে আয়ের নানা পথও তৈরি হয়েছে। তবে অনলাইনে কাজ করে আয় করতে গেলে কোন প্ল্যাটফর্ম ধরে এগোচ্ছেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

অনলাইনে আয় করার নানা সুযোগ থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতারণার মুখে পড়তে হতে পারে। অনলাইনে কাজ করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই এ ধরনের প্রতারণামূলক কাজের ক্ষেত্র থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে হবে। কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট ও রিসোর্স আছে, যা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে আয় করতে পারবেন। জেনে নিন এসব সম্পর্কে:
অনলাইনে আয়ের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার বিষয়টি সবচেয়ে জনপ্রিয়। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে ফ্রিল্যান্স কাজের সুযোগ দেয় কয়েকটি ওয়েবসাইট। সেখানে অ্যাকাউন্ট খুলে দক্ষতা অনুযায়ী কাজের জন্য আবেদন করতে হয়। কাজদাতা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী যোগাযোগ করে ফ্রিল্যান্সারকে কাজ দেয়। 
কয়েকটি ওয়েবাসাইটে কাজের দক্ষতার বিবরণ জানাতে হয়, যাতে ক্রেতা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। এসব সাইটের মধ্যে ফাইভার ডটকম, আপওয়ার্ক ডটকম, ফ্রিল্যান্সার ডটকম ও ওয়ার্কএনহায়ার ডটকমে ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়া যায়। ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায় এসব সাইট থেকে। মনে রাখতে হবে, কাজ শেষ করার পর কাজদাতার অনুমোদন পেলেই তবেই অর্থ ছাড় দেবেন তিনি। এ ক্ষেত্রে কাজের মানের ওপর কাজদাতা রেটিং দিতে পারেন। গ্রাহকের পছন্দ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করে দিতে হয় ফ্রিল্যান্সারকে। বিভিন্ন অনলাইন পেমেন্ট মাধ্যম ব্যবহার করে অর্থ আনা যায়।
নিজের ওয়েবসাইট তৈরি
এখন নিজের ওয়েবসাইট তৈরির জন্য অনলাইনেই অনেক উপাদান পাওয়া যায়। এর মধ্যে ডোমেইন নির্বাচন, টেমপ্লেট ও ওয়েবসাইট তৈরির নকশা প্রভৃতি। যখন পাঠক বা দর্শককে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন কনটেন্ট সেবা দেওয়ার প্রস্তুতি সারা, তখন গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন। গুগলের বিজ্ঞাপন যখন সাইটে দেখানো শুরু হবে এবং তাতে ক্লিক পড়বে, তখন আয় আসতে শুরু করবে। ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা দর্শক যত বেশি হবে, আয়ের পরিমাণ তত বাড়বে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
এই পদ্ধতিতে আয়ের ক্ষেত্রেও নিজের ওয়েবপেজ বা ব্লগ প্রয়োজন। যখন ওয়েবসাইট বা ব্লগ চালু হবে, তখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লিংক তাতে যুক্ত করতে পারবেন। যখন আপনার সাইট থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা কোনো দর্শক কিনবেন, তখনই আপনার আয় আসতে শুরু করবে।
গ্রাফিকস ডিজাইন
অনলাইনে ঘরে বসে আয়ের ক্ষেত্রে গ্রাফিকস ডিজাইন ভালো উপায়। যাঁরা এই কাজে দক্ষ, তাঁরা বিভিন্ন ডিজাইন অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে দিয়ে রাখেন। সেখান থেকে তাঁদের আয় আসে। তাঁদের তৈরি একটি পণ্য অনেকবার বিক্রি হয়, অর্থাৎ একটি ভালো নকশা থেকেই দীর্ঘদিন পর্যন্ত আয় হতে থাকে। অনলাইনে এ ধরনের অনেক ওয়েবসাইটে গ্রাফিকসের কাজ বিক্রি করা যায়। এ ছাড়া অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতেও গ্রাফিকস ডিজাইনারদের অনেক চাহিদা রয়েছে।
জরিপ, সার্চ ও রিভিউ
অনলাইন জরিপে অংশ নিয়ে অর্থ আয় করতে পারেন। অনেক ওয়েবসাইট জরিপে অংশ নিলে অর্থ দেয়। এ ছাড়া অনলাইন সার্চ ও পণ্যের পর্যালোচনা লিখে আয় করতে পারেন। তবে, এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ড বা ব্যাংকিং তথ্য দেওয়া লাগতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে কাজ করার সময় সতর্কভাবে কাজ করতে হবে। এ বিষয়ে কাজের সময় কোনটি প্রকৃত কাজ আর কোনটি স্ক্যাম—যাচাই-বাছাই করে নিয়ে কাজ করতে পারেন।
ভার্চ্যুয়াল সহকারী
এখন ভার্চ্যুয়াল সহকারীদের কাজের ক্ষেত্র বেড়েছে। ঘণ্টাপ্রতি আয়ও বেশি। বাড়ি থেকে করপোরেট অফিসের নানা কাজ অনলাইনে করে দেওয়ার সুবিধা আছে এখন। ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মী বা নিজের ব্যবসা নিজেই চালানো যায়। বিভিন্ন দক্ষতার ভিত্তিতে ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ফোন কল, ই-মেইল যোগাযোগ, ইন্টারনাল রিসার্চ, ডেটা এন্ট্রি, এডিটিং, রাইটিং, ব্লগ, গ্রাফিকস, টেক সাপোর্ট, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবস্থাপনার মতো কাজ থাকে। ২৪ / ৭ ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যাচ, ফ্রিল্যান্সার ডটকম, পিপল পার আওয়ার, আপওয়ার্কের মতো সাইটগুলোতে কাজ পাওয়া যায়।
অনুবাদ
ইংরেজির পাশাপাশি অন্য কোনো ভাষা ভালোভাবে জানা থাকলে সেই দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারেন। বেশ কিছু ওয়েবসাইট আছে যেখানে বিভিন্ন ডকুমেন্ট অনুবাদ করে আয় করতে পারেন। যাঁদের স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, আরবি, জার্মানসহ অন্যান্য ভাষা জানা আছে এবং এগুলো থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ বা ইংরেজি থেকে এসব ভাষায় অনুবাদ করতে পারলে ভালো আয় করতে পারবেন। অনেক সময় কাজদাতারা নিজে সময়ের অভাবে অনুবাদের কাজ ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে করিয়ে নেন। ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে এ ধরনের কাজ পাবেন।
অনলাইন টিউটর
কোনো বিষয়ে যদি আপনার পারদর্শিতা থাকে, তবে অনলাইনে সে বিষয়ে শিক্ষা দিতে পারেন। অনলাইন টিউটরদের এখন চাহিদা বাড়ছে। সব বয়সী শিক্ষার্থীদের আপনি শিক্ষা দিতে পারবেন। এখানে অন্য দেশের শিক্ষার্থীদেরও পড়ানোর সুযোগ রয়েছে। অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অনলাইন টিউশনির সুযোগ রয়েছে। সেখানে সুবিধামতো সময়ে পড়াতে পারেন ছাত্র। এসব সাইটে নিজের দক্ষতার পরীক্ষা দিতে হয়। একবার নির্বাচিত হয়ে গেলে ওয়েবিনার পরিচালক হিসেবে অনলাইন সেশন পরিচালনা করতে পারেন। দক্ষতা বাড়লে এ ক্ষেত্র থেকে অনেক আয় করার সুযোগ আছে।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম
ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট এখন আর শুধু বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নয়। এগুলো কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পরিকল্পকদের প্রচুর অর্থ দেওয়া হয় তাদের ব্র্যান্ডের প্রচার করার জন্য। অনলাইনে গ্রাহক টানা, প্রচার করার জন্য অবশ্য সৃজনশীলতা দরকার। বিভিন্ন পোস্ট তৈরি, ভিডিওর মাধ্যমে ফেসবুক বা অন্যান্য মাধ্যমে প্রকাশ করে তা ভাইরাল করতে পারলে ভালো অর্থ আসে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্যান-ফলোয়ার তৈরিসহ তাঁদের ধরে রাখতে প্রচুর ধৈর্য ও প্রাসঙ্গিক বিষয় হওয়া জরুরি।
ওয়েব ডিজাইন
এখনকার অনলাইনের কাজের ক্ষেত্রে ওয়েব ডিজাইনের চাহিদা ব্যাপক। কোনো প্রজেক্টে ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত সহজে আয় করা যায়। সব ব্যবসায়ী প্রযুক্তিপ্রেমী নন। নিজেদের ওয়েবসাইট তৈরিতে তাঁদের ওয়েব ডিজাইনারের দরকার পড়ে। যাঁরা ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতে চান নিজেদের ওয়েবসাইট খুলে সেখান থেকেই ছোট ব্যবসা দাঁড় করাতে পারেন। ওয়েবসাইট তৈরিতে এখন কোডিং আর ওয়েব ডিজাইন দুটিই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া ওয়েবসাইট ব্যবস্থাপনা ও হালনাগাদের জন্যও ওয়েব ডিজাইনারকে দরকার পড়ে। ফলে ডিজাইনারকে বসে থাকতে হয় না। ক্লায়েন্ট ও কাজের ওপর ভিত্তি করে ওয়েব ডিজাইনারের আয় বাড়তে থাকে।
কনটেন্ট রাইটিং
যাঁরা লেখালেখিতে ভালো এবং একাধিক ভাষায় সাবলীল লিখতে পারেন, তাঁদের কাজের জন্য বসে থাকতে হয় না। অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে কাজ করে বা লিখে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। আর্টিকেল লেখার মানের ওপর ভিত্তি করে আয় আসে। কাজদাতা নির্দিষ্ট নীতি মেনে লেখার জন্য বলতে পারেন। নির্দিষ্ট বিষয় বা নিশ ধরে নিজের দক্ষতা বাড়াতে পারলে আয়ের ধারা বেড়ে যায়।
ব্লগিং
অনেকে শখ করে অনেক বিষয়ে লেখেন। কিন্তু শখের বিষয়টি যদি পেশাগত কাজে লাগাতে পারেন, তবে অনলাইনে আয় করতে পারবেন। ব্লগিং করেও আয় করার সুযোগ আছে। দুই উপায়ে ব্লগ থেকে আয় করা যায়। একটি হচ্ছে নিজের ব্লগ সাইট তৈরি। ওয়ার্ডপ্রেস বা টাম্বলার প্ল্যাটফর্মে বিনা মূল্যে ব্লগ শুরু করতে পারেন। আবার চাইলে নিজে ডোমেইন হোস্টিং কিনে ব্লগ চালু করতে পারেন। তবে নিজে ব্লগ চালু করতে গেলে কিছু বিনিয়োগ করার দরকার হবে। ডোমেইন, হোস্টিং কিনতে হবে। নিজের ব্লগ শুরু করাটাই ভালো। কারণ, এতে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী অনেক পরিবর্তন করার সুযোগ আছে। বিজ্ঞাপন, ফেসবুকের ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল, পণ্যের পর্যালোচনা প্রভৃতি নানা উপায়ে ব্লগ থেকে আয় করতে পারেন। তবে ব্লগ লিখে আয় করতে গেলে রাতারাতি আয় আসবে না। এ জন্য প্রচুর সময় ও ধৈর্য থাকতে হবে। অনেকের ব্লগ থেকে আয় করতে কয়েক বছর পর্যন্ত লেগে যায়। ব্লগে নিয়মিত কনটেন্ট আপডেটসহ তা সক্রিয় রাখতে কাজ করে যেতে হয়।
ইউটিউব
যাঁরা ব্লগ লিখে আয় করতে স্বচ্ছন্দ নন, তাঁরা ক্যামেরার সাহায্য নিয়ে ভিডিও থেকে আয় করতে পারেন। এ জন্য অবশ্য সৃজনশীল আর ভালো সম্পাদনা জানতে হবে। নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলে তাতে ভিডিও আপলোড করে সেখান থেকে আয় করতে পারেন। আপনার চ্যানেল কোন ক্যাটাগরির এবং তাতে কোন ধরনের ভিডিও রাখবেন, তা আগেই ঠিক করে রাখুন। যে বিষয়ে মানুষের আগ্রহ বেশি, সেই বিষয়ে ভিডিও না রাখলে মানুষ তা দেখবে না। ভিডিও না দেখলে আয় হবে না। বিষয়টি অনেকটাই ব্লগের মতো। তবে এ ক্ষেত্রে কনটেন্ট হচ্ছে ভিডিও। চ্যানেলের সাবসক্রাইবার ও ভিডিও দেখার সময় বাড়লে আয়ের সম্ভাবনা বাড়বে। প্রতি হাজার ভিউয়ের হিসাবে গুগল থেকে অর্থ পাবেন।
পিটিসি
অনেক ওয়েবসাইট আছে, যাতে রাখা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলে আপনাকে অর্থ দেওয়া হবে। এ ধরনের সাইটকে পিটিসি সাইট বলে। প্রকল্প শুরুর আগে নিবন্ধন করতে হয়। তবে মনে রাখতে হবে পিটিসি সাইটগুলো বেশির ভাগ ভুয়া হয়। তাই কাজের আগে নিশ্চিত হতে হবে সেটি প্রকৃত সাইট কি না। অনেক সময় বন্ধুতে রেফারেন্স দিয়ে আয় করতে পারেন।
ডেটা এন্ট্রি
অনলাইনে সহজ কাজগুলোর একটি হচ্ছে ডেটা এন্ট্রি। এ ক্ষেত্রে অবশ্য আয় খুব কম। তবে এ ধরনের কাজ অটোমেশনের কারণে এখন খুব কম পাওয়া যায়। যাঁদের কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও দ্রুতগতির টাইপিং দক্ষতা আছে, তাঁরা এ ধরনের কাজ করতে পারবেন। অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সিং সাইটে এ ধরনের কাজ রয়েছে। তবে যাঁদের কোনো কাজে দক্ষতা থাকে, তাঁরা সহজে কাজ পান এবং দ্রুত আয় বাড়াতে পারেন।
মুক্তপেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে অনলাইনে গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করেন সালাউদ্দিন ইশাদ। মাসে কমবেশি দুই হাজার ডলার আয়। বাংলাদেশি হিসেবে ভালোই বলতে হয়। তবু দেশীয় এক প্রতিষ্ঠানে কাজও করেন। গত বছর ফ্রিল্যান্সার ডটকমের অনুপ্রেরণাদায়ী ফ্রিল্যান্সারদের একজন ছিলেন সালাউদ্দিন। এই ফ্রিল্যান্সারের গল্প শোনা যাক।
শুরুতেই ধাক্কা
অনলাইনে কাজ করে যে আয় করা যায়, তা প্রথম শুনেছিলেন বন্ধুদের আড্ডায়। সালাউদ্দিন তখন কাজ করেন এক বিজ্ঞাপনী সংস্থায়। বেতন কম। কোনো রকমে দিন চলত। অতিরিক্ত আয়ের আশায় বন্ধুদের পরামর্শে অনলাইনে কাজের বাজার ওডেস্কে (বর্তমানে আপওয়ার্ক) গ্রাফিক ডিজাইনের কাজগুলোতে আবেদন করতে শুরু করেন। প্রথম দিনেই এক নিয়োগদাতা যোগাযোগ করে কাজ বুঝিয়ে দিলেন। ঠিকঠাক করে দিলেও শেষমেশ সালাউদ্দিনের পকেটে পারিশ্রমিক ঢোকেনি। কারণ আবেদন করলেও চুক্তি না করেই কাজ করে দিয়েছিলেন। কাজের বিজ্ঞাপনদাতাও সে সুযোগ নিয়েছিলেন।
চাকরি ছেড়ে দেওয়া
প্রথম কাজের অভিজ্ঞতায় কিছুটা হতাশ হয়েছিলেন। তবে বুঝেছিলেন, কাজের দক্ষতার সঙ্গে দিকনির্দেশনাও দরকার। সে জন্যই বিজ্ঞাপন দেখে তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউটে যোগাযোগ করেন। গ্রাফিক ডিজাইন মোটামুটি জানতেন। আরেক প্রস্থ প্রশিক্ষণ নিলেন। এরপর শুরু হলো সালাউদ্দিন ইশাদের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার।
অনলাইনে প্রথম আয় লোগোর নকশা করে। ফ্রিল্যান্সার ডটকমে লোগো নকশার প্রতিযোগিতা হয়। যার নকশা চূড়ান্ত হবে, পুরস্কার হিসেবে তিনি পাবেন ১৫০ ডলার। প্রথমেই দেড় শ ডলারের সে পুরস্কার পান সালাউদ্দিন। এরপর বিজ্ঞাপনী সংস্থার চাকরি ছেড়ে দিয়ে পূর্ণোদ্যমে ফ্রিল্যান্সিংয়ে মন দেন।
সেরাদের তালিকায়
অনলাইনে সাধারণত পশ্চিমা দেশের নিয়োগদাতারা বেশি কাজ পোস্ট করে থাকেন। বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁদের সময়ের ফারাক থাকায় শুরুতে বিপাকে পড়েন সালাউদ্দিন। মা বুঝতেন না। বারবার বলতেন, রাত জেগে এত কাজ কিসের? তবু অনেক রাত জেগে কাজ করে গেছেন দীর্ঘদিন। কাজের মাধ্যমেই বেশ কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতে থাকে সালাউদ্দিনের। নিয়োগদাতারাও তাঁর কাজ পছন্দ করতেন। এতে আর নতুন নতুন কাজের জন্য রাত জেগে আবেদন করতে হতো না। নির্ধারিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত কাজ করতে থাকেন।
গত বছর আড়াই কোটি মুক্তপেশাজীবী যোগ দেওয়ার মাইলফলক উদ্​যাপন করে ফ্রিল্যান্সার ডটকমে। সে সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনুপ্রেরণাদায়ী ফ্রিল্যান্সারদের গল্প ওয়েবসাইটটিতে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে স্থান করে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের সালাউদ্দিন ইশাদ।
আবারও চাকরি
শুরুতেই বলা হয়েছে, ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সালাউদ্দিনের দিন ভালোই যাচ্ছে। তবু আবার দেশীয় এক প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেন। সালাউদ্দিনের কণ্ঠে যেন খানিকটা হতাশা। বললেন, ‘ফ্রিল্যান্সিংয়ে আয় ভালো, তবে এই কাজের সামাজিক স্বীকৃতি নেই। চাকরিটা করতে হয় সম্মানের জন্য। বলতে পারেন একটা পরিচয়ের জন্য।’
উপস্থাপনাই মুখ্য
সে যা–ই হোক, ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। মোটামুটি সব মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট থাকলেও ফ্রিল্যান্সার ডটকমে বেশি কাজ করেন। আর গ্রাফিক ডিজাইনের মধ্যে ব্র্যান্ডিং ধাঁচের কাজ করেন বেশি। লোগো, ইউজার ইন্টারফেস, ভিজ্যুয়াল বিজ্ঞাপন, ব্যানার, ফ্লোচার্ট, সাইট ম্যাপ, বিজনেস কার্ড, সাময়িকী ও পত্রিকার লেটারহেড ইত্যাদি নকশার কথাই ঘুরেফিরে এল সালাউদ্দিনের কথায়। বর্তমানের তথ্যপ্রযুক্তির যেকোনো কাজে নকশা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন সালাউদ্দিন। বললেন, ‘কঠিন প্রোগ্রামিং–সংকেত মানুষ দেখে না, তারা দেখে এর উপস্থাপনা।’
নতুনদের উদ্দেশে
পরিশ্রম, দিকনির্দেশনা ও ধৈর্য—ফ্রিল্যান্সিংয়ে নতুন হলে এই তিনটির অনেক দরকার। নতুনদের জন্য বর্তমান সময়টা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং। এ জন্য পরিশ্রমী হতে হবে। প্রতিনিয়ত শিখতে হবে। অল্প শিখেই আবেদন না করে বরং অভিজ্ঞদের সাহায্য নিন। গুটিকয়েক কাজ করলেই পেশাদারত্ব চলে আসে না। নিজের কাজের ভুল নিজে খুঁজে বের করা কিন্তু কঠিন। এ জন্য অভিজ্ঞদের সহায়তা নেওয়ার কথা বললাম। সবচেয়ে বড় কথা, এ কাজে সফলতা পেতে চাইলে ধৈর্য থাকতে হবে। অল্পে হতাশ হওয়া চলবে না।
যেকোনো পেশায় যেমন দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহির ব্যাপার আছে, ফ্রিল্যান্সিংয়েও তা–ই। এই কাজে বরং জবাবদিহির দায় বেশি হওয়া উচিত। কারণ কাজের বাজার থেকে প্রতিযোগিতা করেই কাজ নিতে হচ্ছে। নিয়োগদাতারাও বিশ্বাস করেই কাজ দিচ্ছেন। তাঁদের সে বিশ্বাসের প্রতি সম্মান থাকতে হবে। এ জন্য পুরো কাজ ভালোভাবে বুঝে, তবেই সে কাজে হাত দিতে হবে। এর ওপরেই সুনাম নির্ভর করে। কাজ শেষে নিয়োগদাতা যে পর্যালোচনা (রেটিং) জানান, ভবিষ্যৎ কাজ পেতে তা সাহায্য করে।
যাঁরা অনলাইনে তথ্যপ্রযুক্তি কাজে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাচ্ছেন, তাঁদের জন্য সালাউদ্দিন দুটি বিভাগে পরামর্শ দিয়েছেন।
যাঁরা নতুন
● পছন্দের বিষয় নিয়ে সব সময় গবেষণা করুন
● ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখুন
● অনবরত কাজের অনুশীলন করুন
● কাজসংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন
● প্রয়োজনে ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ শিখুন
যাঁরা অভিজ্ঞ
● এখানেও শুরুতেই গবেষণার কথা বলতে হয়, এতে নতুন নতুন ধারণা পাওয়া যায়
● যত বেশি সম্ভব কাজ করে যান
● অভিজ্ঞদের কাজ দেখুন
● পোর্টফলিও সাইট, যেমন বিহ্যান্স, ড্রিবলের মতো ওয়েবসাইটগুলোতে হালানাগাদ থাকুন
মাথায় রাখা ভালো
● নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ জমা দিন
● কাজ সম্পর্কে নিয়োগদাতার প্রতিক্রিয়া গুরুত্বের সঙ্গে নিন
● নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিন
যেসব মার্কেটপ্লেসে কাজ শুরু করতে পারেন
● upwork.com
● freelancer.com
● peopleperhour.com
● envato.com
● fiverr.com
● creativemarket.com
● codegrape.com
● 99design.com
স্বপ্ন তো সবাই দেখে। কারও স্বপ্ন রূপ পায় সাফল্যে, আবার কারও স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে পারেন তাঁরা, যাঁদের মধ্যে রয়েছে মেধা, অধ্যবসায় ও পরিশ্রম। এমনই একজন ফ্রিল্যান্সার শরিফুল ইসলাম। যিনি প্রিন্ট ডিজাইনে পেয়েছেন সেরা হওয়ার স্বীকৃতি। ২০১৬ সালে সেরা ৩৮২ এনভাটো অথোরদের একজন। আউটসোর্সিং কাজের জন্য ক্রিয়েটিভ অনলাইন বাজারে (মার্কেটপ্লেস) হয়েছেন ২০১৭ সালের সেরা হ্যান্ডপিক আইটেম অথোরদের একজন। ২০১৮ সালে আমন্ত্রণ পেয়েছেন বিশ্বখ্যাত অ্যাডবি স্টক মার্কেটেও। শরিফুলের প্রথম আয় ছিল ৬২ ডলার। এখন মাসে ২ হাজারের বেশি ডলার আয় করেন তিনি।
শুরুর গল্পরাজধানীর শনির আখড়ায় থাকেন শরিফুল ইসলাম। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। বাবা-মা ও ছোট বোনকে নিয়েই ছোট পরিবার। আর পরিবারের বড় ছেলে শরিফুল। বন্ধুবান্ধব যখন চাকরিতে ব্যস্ত, শরিফুল তখন ফ্রিল্যান্সিং করা শুরু করেছেন। শিখেছেন কম্পিউটার গ্রাফিকস। এমন কাণ্ড দেখে খেপে গেলেন বাবা শাহাব উদ্দিন। কোনো কাজকর্ম নেই? শুধু বাসায় বসে বসে কম্পিউটারে সারা দিন-রাত জেগে কী করো? এসব বলেই শরিফুলের বাবা কম্পিউটারসহ যাবতীয় যন্ত্র ভেঙে ফেলেন।
বাবার এমন রাগ থাকাটা স্বাভাবিক। কারণ এর আগে ২০১০ সালে শরিফুল বাবার জমিয়ে রাখা পাঁচ লাখ টাকা মায়ের কাছ থেকে নিয়ে শেয়ার ব্যবসা শুরু করেছিলেন। শেয়ার ব্যবসায় ধস নামলে পুরো টাকাটাই হারাতে হয় তাঁকে। বাসায় তৈরি হয় অশান্তি। ‘খুব খারাপ সময় কী করব বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু একটা বিশ্বাস ছিল, সঙ্গে জেদও, আউটসোর্সিং কাজে নিজেকে গড়ে তুলব।’ বললেন শরিফুল।
২০১৪ সালে লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং কর্মসূচির আওতায় ঢাকার ক্রিয়েটিভ আইটিতে গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স করেন শরিফুল। এরপর পুরোপুরি ফ্রিল্যান্সার বনে যান। বর্তমানেও একই কাজ করছেন তিনি।
প্রথম আলো ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে পারেন বিস্তারিত। সময়টা তখন ২০১৩-১৪। একটি সেমিনারে অংশ নেন ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউটে। সেমিনারটি করেই গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স করার সিদ্ধান্ত নেন শরিফুল।
গ্রাফিক ডিজাইনের প্রিন্ট ও প্রকাশনা বিষয়ে নিজেকে বেশি উপযুক্ত মনে করেন শরিফুল। গ্রাফিক ডিজাইনের অনেক প্যাটার্ন আছে। লোগো, বিজ্ঞাপন, ব্যানার, বিজনেস কার্ড, পোস্টকার্ড ডিজাইন, পাওয়ারপয়েন্ট উপস্থাপনা, লেটারহেড ডিজাইন, বইয়ের অঙ্গসজ্জা, শেষ প্রচ্ছদ, রেস্তোরাঁর মেনু কার্ড ইত্যাদি ডিজাইন করেন তিনি।
শরিফুল মূলত রেডি টেম্পলেট নিয়ে কাজ করেন। গ্রাহক চাইলে নিজেই সেটা পরিবর্তন করে ব্যবহার করতে পারেন। তিনি এনভাটো স্টুডিওতেও সেবা দেন। শরিফুলের বেশির ভাগ গ্রাহক যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার। দেশের বাজারে ২০১৪ সালের পর কখনোই কাজ করেননি তিনি।
শরিফুল তাঁর পেশার প্রথম দিককার কথা বলতে থাকেন, ‘সবাই যখন ধরেই নিয়েছে আমি হয়তো ভালো কিছু করতে পারব না; বিশেষ করে বাবা, তখন আমার মা আমার ওপর আস্থা বা বিশ্বাস কোনোটাই হারাননি। আমার প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে বাবাকে না জানিয়ে নীরবেই সহায়তা দেন। যতটুকু সাফল্য অর্জন করেছি, তার সবটুকু জুড়েই রয়েছে আমার মা।’

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনের স্মার্টফোন ও ট্যাব মেলা। মেলায় নানা ছাড় ও উপহার ঘোষণা করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান এক্সপো মেকার।
মেলার আয়োজকেরা জানান, মেলা ঘিরে বৃহস্পতিবার থেকেই সব ধরনের মানুষের আগ্রহ দেখা গেছে। আজ শুক্রবার ছুটির দিনে মেলায় স্মার্টফোন কিনতে মানুষের আগ্রহ আরও বাড়তে পারে। মেলায় ছাড় আর উপহারের কারণে অনেকেই মেলা থেকে স্মার্টফোন ও আনুষঙ্গিক জিনিস কিনছেন। মোবাইলে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসির বাজারে পড়েছে। ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, ওয়ার্কস্টেশন মিলিয়ে গত বছরের শেষ তিন মাসে পিসি বাজারে আসার হার কমেছে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ২০১৭ সালের শেষ প্রান্তিকের সঙ্গে ২০১৮ সালের শেষ প্রান্তিক, অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে পিসি বাজারে আসার হার ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। বিশ্লেষকেরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, পিসি বাজারে আসার হার ৪ দশমিক ৭ শতাংশ কমতে পারে।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডেটা করপোরেশন (আইডিসি) ও গার্টনার পৃথক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্যযুদ্ধকে পিসি বাজারে আসার হার কমার কারণ হিসেবে দেখিয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতা করে বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়। একইসঙ্গে প্রজ্ঞাপনে দলটির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে বিরোধী দলের উপনেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ৫ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টিকে প্রধান বিরোধী দল ঘোষণা দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
ওই চিঠিতে এরশাদ বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদে আপনি স্পিকারের দায়িত্ব গ্রহণ করায় প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনি অবগত আছেন যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার জাতীয় পার্টি ২২টি আসনে বিজয় লাভ করে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল তথা প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা লাভ করেছে।
নির্বাচনের এই ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দলের গঠনতান্ত্রিকভাবে পদাধিকারবলে আমি জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি পার্টিরও সভাপতি। এই প্রেক্ষাপটে আমি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ (রংপুর-৩) প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা এবং পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (লালমনিহাট-৩) বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। অতএব মহাত্মন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনার প্রতি সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।’
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে মহাজোট ২৮৯ আসনে জয়ী হয়। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির রয়েছে ২২টি আসন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এ নির্বাচনে মাত্র সাতটি আসনে জয়ী হলেও তারা শপথ নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।
পাঁচ পথিকৃৎ সাংবাদিকের নামে জাতীয় প্রেসক্লাবের চারটি হল ও পাঠাগারের নামকরণ করা হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের বিদায়ী সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি, নবনির্বাচিত সভাপতি সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন মঙ্গলবার এই চারটি হল এবং পাঠাগারের নামফলক উন্মোচন করেছেন।
বরেণ্য এই পাঁচ সাংবাদিক হলেন- মরহুম মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ, জহুর হোসেন চৌধুরী, আবদুস সালাম, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ও কবি শামসুর রাহমান।
এ সময় প্রেসক্লাবের বিদায়ী ও নবনির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতারাসহ সিনিয়র সম্পাদক এবং সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিদায়ী ও নবনির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির যৌথসভায় ব্যবস্থাপনা কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। যৌথসভার পর জাতীয় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ক্লাবের বিদায়ী সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপিকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ী হওয়ার পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভায় পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেন বিদায়ী সরকারের অর্থ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান।
সরকারের সাবেক এই আমলা ১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ডুংরিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
গ্রামের স্কুলে তার প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে সারগোদায় অবস্থিত পাকিস্তান এয়ারফোর্স স্কুল থেকে ও লেভেলে উত্তীর্ণ হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রির পর ১৯৭৪ সালে তদানীন্তন সিএসপি ক্যাডারে যোগ দেন এবং জেলা প্রশাসক কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামসহ সরকারের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।
আব্দুল মান্নান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুগ্মসচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক এবং এনজিও ব্যুরোতে মহাপরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন।
তিনি জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের ইকোনমিক মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সর্বশেষ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে ২০০৩ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন নতুন এই পরিকল্পনামন্ত্রী।
আব্দুল মান্নান ২০০৫ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিলে তিন বছর পর দলটি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
নবম জাতীয় সংসদে তিনি পাবলিক অ্যাকাউন্টস সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। পাশাপাশি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে ছিলেন তিনি।
২০১০ এবং ২০১৩ সালে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।
তার স্ত্রী জুলেখা মান্নান ঢাকা উইমেন্স কলেজের শিক্ষিকা ছিলেন। এ দম্পতির চিকিৎসক মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাস জীবন যাপন করছেন।
আর ছেলে সাদাত যুক্তরাজ্যের বার্কলেইস ক্যাপিটাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং লন্ডনে বসবাস করছেন।
ডেভেলপমেন্ট লিটারেচার নিয়ে আগ্রহ রয়েছে আব্দুল মান্নানের। এজন্যই গ্রামীণ জনগণের কল্যাণে কাজ করছেন তিনি।
দ্বিতীয়বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির এই যুগে জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইন্টারনেট। আর ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে চারদিকে ফ্রি ওয়াইফাই জোনের ছড়াছড়ি।
রেলস্টেশন, বিমানবন্দর, রেস্তোরাঁ এমনকি শপিংমল ও গ্রাহক টানতে এখন ওয়াইফাই দ্বারস্থ হয়েছে। ফলে, এসব স্থানে গেলে পাসওয়ার্ড ছাড়াই ‘ওয়াইফাই’ কানেক্ট করা যায়। এসব ‘ওয়াইফাই’ নেটওয়ার্কের জন্য একটি ‘হটস্পট’ ডিভাইস লাগে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় এ ‘হটস্পট’ ডিভাইসটির ভাইরাস প্রতিরোধ করার ক্ষমতা থাকে না। ফলে, এ ‘হটস্পট’-এর সঙ্গে সংযুক্ত ডিভাইসগুলোতেও ভাইরাস আক্রমণ করে সহজেই।
এমনকি এসব পাবলিক হটস্পট কানেক্ট করার মাধ্যম ভাইসের সব তথ্য হ্যাকারদের কাছেও চলে যায়। অনেক সময় পাবলিক ‘ওয়াইফাই’ জোনে নানা সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগানো থাকে।
যাতে এ ‘ওয়াইফাই’ জোনে স্মার্টফোন বা ল্যাপটপগুলোকে সাবধানে ব্যবহার করার জন্য সতর্ক করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ সময়েই মানুষ এসব সাইনবোর্ডকে পাত্তা দেয় না।
কোনোভাবে হ্যাকাররা যদি মোবাইলে থাকা ব্যাংকিং ডিটেইলস, যেমন অ্যাকাউন্ট নাম্বার, ডেবিট কার্ড নম্বর, পিন নম্বর, পেয়ে যায়, তাহলে নিঃস্ব হতে পারে ব্যবহারকারী। এসব ‘ফ্রি ওয়াইফাই’ কানেকশনে কোনো পাসওয়ার্ড তো থাকেই না, এমনকি এর রাউটারও অত্যন্ত নিুমানের হয়।
ফলে, ‘ফ্রি ওয়াইফাই’-এ কানেক্ট হওয়া স্মার্টফোন খুব সহজেই হ্যাক করা যায়।
তাই, সুরক্ষিত ‘ওয়াইফাই জোন’ ছাড়া কোথাও মোবাইল বা ল্যাপটপ কানেক্ট না করতেই পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যপ্রযুক্তি এক্সপার্ট জিনিয়া জাহান জুঁই বলেন, এসব ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহারের ফলে ব্যবহারকারীর তথ্য সহজেই বেহাত হয়ে যেতে পারে।
এমনকি হ্যাকার চাইলে ওই নির্দিস্ট হটস্পটে সংযুক্ত থাকা সব ডিভাইসের তথ্য হ্যাক করে বিপদে ফেলতে পারে ব্যবহারকারীকে। তাই এ ধরনের পাবলিক হটস্পটে সংযুক্ত হয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার উচিত নয় বলেও জানান জিনিয়া জাহান জুঁই।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রগতির লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছি আমরা। ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৭০০ গাড়ি চুরি হয়। অর্থাৎ প্রতিদিন দুটি। আবার অনেকেই আছেন গাড়ির দায়িত্ব ড্রাইভারের হাতে তুলে দিয়েও স্বস্তিতে থাকতে পারেন না। না জানি তেল চুরি হয়ে যায়, নাকি ফিরতি পথে ফাঁকা গাড়িতে লোকাল যাত্রী তোলে।
এসব সমস্যা কখনো এতটাই প্রকট হয়ে ওঠে যে, একটু স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য কেনা গাড়িটি হয়ে ওঠে দুশ্চিন্তার কারণ।
বহির্বিশ্বে এসব সমস্যা না থাকলেও, তারা গাড়ি নজরদারি করতে গাড়িতে ট্র্যাকিং ডিভাইস ব্যবহার করে। গাড়ি চুরি ঠেকাতে আর খরচ বাঁচাতেই তাদের ব্যবহার সীমাবদ্ধ।
কিন্তু আমাদের দেশে গাড়ি নিয়ে, গাড়ির মালিকরা যেই ভিন্ন মাত্রার সমস্যার সম্মুখীন হয়, তার সমাধানের জন্য বুয়েটের কয়েকজন মেধাবী ইঞ্জিনিয়ার দেশের  প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করেছে ভেইকেল ট্র্যাকিং ডিভাইস প্রহরী।
তেল চুরি করছে নাকি তা এখন জানা যাবে মোবাইল ফোনেই। অচেনা যাত্রী উঠিয়ে ট্রিপ দিচ্ছে কিনা তাও জানা যাবে ডোর এলার্ট বা জিও ফেন্স ভায়োলেশনে।
গাড়ি যদি বাচ্চার স্কুল থেকে আনা নেয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়, প্রহরী ডেশটিনেশন এলার্ট জানাবে আপনার শিশু সঠিক সময়ে, নিরাপদে স্কুলে পৌঁছেছে কিনা।
এছাড়াও প্রহরীর মোট ২০টিরও বেশি ফিচারের মাধ্যমে গাড়ি থাকবে নিরাপদ এবং সুরক্ষিত। প্রহরী অ্যাপ এবং ওয়েবপোর্টাল দুই মাধ্যমেই গাড়ি ট্র্যাক করার সুবিধা থাকায় বন্ধ হবে গাড়ির সব ধরণের অনৈতিক অপব্যবহার।
প্রহরীর চারটি রেডি প্যাকেজ- লাইট, বেসিক, স্ট্যান্ডার্ড এবং প্রিমিয়াম। প্যাকেজভেদে দাম পড়বে ৪ হাজার ৪৯৯ টাকা থেকে শুরু করে ১১ হাজার ৯৯৯ টাকা পর্যন্ত।
মাসিক চার্জ ৪৫০ থেকে ৬৯৯ টাকা। কেউ চাইলে নিজের প্রয়োজন ও ইচ্ছা অনুসারে ফিচার বেঁছে নিয়ে কাস্টমাইজড প্যাকেজ নেয়ার ও সুবিধা পাবেন। ইন্সটলেশন একদম ফ্রি।
ট্র্যকিং জনিত যেকোনো সমস্যার সমাধানে প্রহরীর নিজস্ব কাস্টমার কেয়ার গ্রাহকের সেবায় জন্য সর্বদাই প্রস্তুত। প্রহরী বিশ্বাস করে, যোগাযোগটা যান্ত্রিক হলেও সম্পর্ক থাকুক মানবিক।
প্রহরীর ওয়েবসাইট https://www.prohori.com সহ, দেশের জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইটগুলোতে এবং প্রহরী হটলাইন ০১৭০৮১৬৬১৬৬ নম্বরে কল করে কেনা যাবে প্রহরী।
ঢাকার আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে (বিআইসিসি) শুরু হচ্ছে টেকশহরডটকম স্মার্টফোন ও ট্যাব মেলা।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে এ মেলার উদ্বোধন করবেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
আজ থেকে শুরু হয়ে মেলাটি চলবে শনিবার পর্যন্ত। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেলায় প্রবেশ ফি ২০ টাকা। শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড দেখিয়ে বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন। দেশে স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট কম্পিউটার নিয়ে ২০১৯ সালের এ মেলা এক্সপো মেকারের ১১তম আয়োজন।
মেলার আয়োজকরা জানান, মেলায় সর্বশেষ প্রযুক্তির স্মার্টফোন ও ট্যাবসহ আধুনিক সব স্মার্ট ডিভাইস যাচাই-বাছাই করে দেখতে ও কিনতে পারবেন সবাই।
মেলায় বিশ্বখ্যাত সব ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট পাওয়া যাবে। এখানে হুয়াওয়ে, স্যামসাং, টেকনো, ভিভো, উই, গোল্ডেনফিল্ড, মটোরোলা, নকিয়া, আইফোন, ইউসিসি, আইটেল, ইনফিনিক্স, ইউমিডিজি, ডিটেল, এডিএ, ম্যাক্সিমাস এবং ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান প্রিয়শপডটকমসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে।
ব্র্যান্ডগুলো মেলায় বিভিন্ন মডেলের স্মার্টফোন ও স্মার্ট ডিভাইস প্রদর্শন ও বিক্রি করবে। বেশ কিছু নতুন মডেলের স্মার্টফোন উম্মোচনও করা হবে। পাওয়া যাবে মোবাইল অ্যাক্সেসরিজও।
এক্সপো মেকারের কৌশলগত পরিকল্পনাকারী মুহম্মদ খান জানান, প্রদর্শনী উপলক্ষে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ ছাড় ও উপহার দেবে। দর্শকরা প্রযুক্তির আধুনিক সব স্মার্ট ডিভাইস যাচাই-বাছাই করে দেখতে ও কিনতে পারবেন।
মেলার সব আপডেট ও খবর স্মার্টফোন ও ট্যাব এক্সপোর অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ এবং দেশের আইসিটি ও টেলিকমবিষয়ক শীর্ষস্থানীয় নিউজ পোর্টাল টেকশহরডটকম (www.#)-এ পাওয়া যাবে।